কার্টুনপত্তর চেয়েছিল আর কে লক্ষ্মণ সুস্থ হয়ে উঠুন।
থাকুন। আমাদের কাছে থাকুন।
আমাদের চাওয়া না-মেনে চলে গেলেন।
রসিপুরম কৃষ্ণস্বামী লক্ষ্মণ। জন্ম ১৯২৪, মহীশুরে। কার্টুন আঁকা শুরু ১৯২৪, বোম্বাইয়ের সংবাদপত্র ফ্রি প্রেস জার্নালে। ৬ মাস বাদে টাইমস অফ ইন্ডিয়া। স্টাফ কার্টুনিস্ট। আঁকার শেষদিন পর্যন্ত এই সংস্থায়।
লক্ষ্মণ লিখেছেন ছোট গল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমণকথা। এই ধরনের লেখা নিয়ে বই : দি আইডল আওয়ারস, দি ডিসটরটেড মিরর। দুটি কাহিনিগ্রন্থের রচয়িতা : দি হোটেল রিভিয়েরা, দি মেসেঞ্জার। আত্মজীবনী দি টানেল অফ টাইম। তাঁর কার্টুন সংকলন : দি বেস্ট অফ লক্ষ্মণ, লাফ উইথ লক্ষ্মণ, দি টানেল অফ টাইম, ব্রাশিং আপ দি ইয়ারস।
ব্রাশিং আপ দি ইয়ারস: আ কার্টুনিস্ট’স হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া: ১৯৪৭ টু দি প্রেজেনট, পেঙ্গুইন। ২০০৫ সালে প্রকাশিত বইটির ভূমিকায় বলা হয়েছে তখন পর্যন্ত তাঁর আঁকা প্রায় ৩০,০০০ কার্টুন থেকে নির্বাচিত কার্টুন সেখানে ছাপা হয়েছে।
বইটির শুরুতে লক্ষ্মণ লিখেছেন, “আমাদের দেশের নেতারা স্বাধীনতা-উত্তর কালে এক বিশেষ ধরনের রাজনীতিকতা তৈরি করেছিল। আদর্শগত বিষয় ও গঠনমূলক প্রকল্প, যা সাধারণ মানুষের মঙ্গলের জন্য, রাজনৈতিক সংবাদে তা আর নেই।
“যতই আমি আমার কার্টুনে স্বপ্নের মধ্যে থাকা, মোহগ্রস্ত হয়ে থাকা আমাদের দেশের রাজনৈতিক ধারাকে দেখছি, আর মন্তব্য করতে থাকছি, ততই আমি প্রয়োজন বোধ করছি একটা প্রতীকের, একটা গ্রহণযোগ্য প্রতীক, যা একজন সাধারণ দেশবাসীর প্রতিনিধিত্বের চিহ্ন।
“প্রথম দিকে আমার কার্টুনে জনগণ আঁকতে গিয়ে যতজনকে পেরেছি, রেখেছি। ক্রমে সংখ্যাটা কমিয়েছি। শেষে শুধু একজন। ‘কমন ম্যান’। তার মুখে হতভম্বতা, আর সে সর্বগামী।
“সে দেশের সব ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর্থনীতিক সংকটের সাক্ষী। এবং সব সমস্যার মধ্যেও সে টিকে আছে। লক্ষ-লক্ষ নীরব দেশবাসীর মতো সে কোন কথা বলে না। তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঘটনাপ্রবাহের সে শুধুই একজন নিশ্চুপ, হতভম্ব দর্শক।”
বড় কার্টুনে কমন ম্যান, ছোট কার্টুনে কমন ম্যান। ‘ইউ সেড ইট’। যা ঘটছে তা-ই নিয়ে। আসল রাজনীতিকদের নিয়ে নয়, তখনি-তখনি ঘটছে এমন রাজনৈতিক ঘটনা নিয়েও নয়।
কমন ম্যান হাজির গ্রামে, আমলাদের কাছে, মন্ত্রীদের পাশে, অফিসযাত্রীদের মাঝে, ব্যবসায়ীদের মাঝে, গৃহস্থদের ভিতরে। সব ধরনের বাস্তবতায়। সব ধরনের জীবনযাপনে।
কার্টুনে ‘কমন ম্যান’ প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতি হওয়ার পথে। কার্টুনে লক্ষ্মণ নিজেকে এঁকেছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতায় বীতশ্রদ্ধ লক্ষ্মণ কার্টুন আর আঁকবেন না বলেছিলেন। কার্টুন আঁকতে না চাইলেও কার্টুনিস্টদের স্বাধীনতার দাবি তাঁর, এবং আকাঙ্ক্ষা দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের।
লক্ষ্মণের চলে-যাওয়া : উদয় দেব-এর প্রতিক্রিয়া