এখন দুগ্গোপুজোর মরসুম। এ বারের কার্টুনের বিষয় দুগ্গোপুজো।
প্রথম কার্টুনটি নেওয়া হয়েছে একটি বই থেকে। দুর্গাপূজা-চিত্রাবলী, শ্রী চৈতন্যদেব চট্টোপাধ্যায় ও শ্রী বিষ্ণুপদ রায়চৌধুরী প্রণীত, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৩৬।
বইটিতে আঁকা ছবি ডানদিকের এক পাতায়, আর বাঁদিকের পাতায় ছবিটি নিয়ে কথা। একটি ছবি নেওয়া হল। ছবিটিকে কার্টুন বলা হয়নি। আমাদের মনে হয়েছে কার্টুন। ছবিটির নিচে কথায় লেখা আছে, ‘… দুর্গার প্রসাদ বিত্ত, ঐশ্বর্য, শক্তিপূজার ভান না করেও বিদেশীয় শক্তিমানেরা লুটে নিয়ে যাচ্ছে… প্রতিমার পিছন থেকে।’ এই কথাটি সাহস করে লিখে দেওয়া, ব্যঙ্গ করে এঁকে দেওয়া ১৯৩৬-এ, পরাধীন ভারতে। বইটির ভূমিকায় বার বার বলা হয়েছে, কথা লেখা, ছবি আঁকা, ‘ভয় ভাঙাবার জন্য’, ‘ভয় ভাঙিয়ে চোখ ফোটাবার জন্য’। যা আমাদের মনে হয় কার্টুনের একটা কাজ।
দুগ্গোপুজো নিয়ে দ্বিতীয় কার্টুনটি অহিভূষণ মালিকের আঁকা। কার্টুনটি ছাপা হয়েছিল দৈনিক পত্রিকা ‘সত্যযুগ’-এ পঞ্চাশের দশকে। তারিখটা জানতে পারিনি। আমরা সংগ্রহ করেছি ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ রসিকেষু’ পত্রিকার অহিভূষণ মালিক স্মরণ সংখ্যা (ষষ্ঠ বর্ষ ১৪০৬) থেকে। এই ব্যঙ্গচিত্রটির শিরোনাম ‘মা আসিয়াছেন’। ১৯৫০ দশকের খাদ্য সংকট, বস্ত্র সংকট, দারিদ্র কার্টুনের বিষয়। দুর্গা ছেঁড়া শাড়ি পড়ে, লক্ষ্মীর ঝাঁপি শূন্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সামরিক সজ্জায় সরস্বতী, কার্তিক জেলে বন্দি, প্রতিবাদী মানুষ, দাবিতে সোচ্চার গণেশ। এত বছর বাদে এখনও খাদ্যসংকট, দারিদ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাস, প্রতিবাদী জনগোষ্ঠী, রাষ্ট্রের আক্রমণ, জেলবন্দি, সরকারের বিরুদ্ধে দেশবাসী। কার্টুন মনে করিয়ে দিল, দেয়।